Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

পান্তা ভাতের পুুষ্টিগুণ

ড. মো. দেলোয়ার হোসেন মজুমদার১,              ড. মুহম্মদ শরীফুল ইসলাম২


গাঁজায়িত ভাত (ঋবৎসবহঃবফ ৎরপব) বা পানিতে ভেজানো ভাতকে পান্তা ভাত বলে। গ্রামের মানুষ বিশেষ করে শ্রমজীবীদের কাছে এ ভাত সকালের প্রধান খাদ্য হিসেবে বহুল প্রচলিত ছিল। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের পশ্চিম বাংলা, আসাম এবং উড়িষ্যায় এ ভাত খুব জনপ্রিয় খাদ্য। পয়লা বৈশাখে অর্থাৎ বাংলা নববর্ষের উৎসবে পান্তা ভাত খাওয়া এখন বাঙালির সংস্কৃতির অংশ হয়ে ওঠেছে। এদিন বিশেষ করে শহরের মানুষ সকালে পান্তা-ইলিশ খেয়ে থাকেন। গবেষণায় দেখা গেছে পান্তাভাতে ফ্রেশভাতের চেয়ে  প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান থাকে।
পুষ্টিগুণ : পান্তাভাত কে আগে গরিব মানুষের খাবার এবং এর পুষ্টিমূল্য নেই বলা হতো। কিন্তু বর্তমানে বিজ্ঞানীদের গবেষণার তথ্য মতে এ ভাতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান। ২০১১ সালে ‘দি টেলিগ্রাফ্ ইন্ডিয়া’ তে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী আসাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি জীব প্রযুক্তি বিভাগ কর্তৃক পান্তাভাত নিয়ে এক গবেষণায় এ ভাতের অনেক     উপকারিতা সম্পর্কে জানা যায়। এ বিভাগের একজন গবেষক অধ্যাপক মধুমিতা বড়ুয়া বলেন যে, রান্না করা ভাতে এমন একটা উপাদান থাকে যা খনিজ উপাদান যেমন- আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও সোডিয়ামের পর্যাপ্ত প্রাপ্তিতে বাধা দেয়। পক্ষান্তরে পান্তাভাতে বা গাঁজন প্রক্রিয়াজাত খাদ্যে হাইড্রোলাইসিস (পানির সংগে রাসায়নিক বিক্রিয়া) এর মাধ্যমে উৎপাদিত ল্যাকটিক এসিড ব্যাকটেরিয়া দ্বারা এর পুষ্টি-শোষণ বিরোধী   (ধহঃর-হঁঃৎরঃরড়হধষ) ফ্যাক্টর (যেমন-ফাইটিক এসিড) ভেঙ্গে যায়। ফলে পান্তাভাতের অনুপুষ্টি/খনিজ উপাদানগুলো (সরহবৎধষ পড়হঃবহঃং) মুক্ত হয় এবং এর গুণাগুণ বেড়ে যায়; অর্থাৎ গাঁজন প্রক্রিয়ায় খাবারের আবদ্ধকৃত        অনুপুষ্টিসমূহের মুক্তি    (নরড়-ধাধরষধনষব) সহজ করে।
অধ্যাপক মধুমিতা বাড়ুয়া এর গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য        অনুযায়ী প্রতি ১০০ গ্রাম রান্না করা সাধারণ (ফ্রেশ) ভাতের চেয়ে সমপরিমাণ পান্তাভাতে আয়রন, ক্যালসিয়াম,      পটাশিয়াম ও সোডিয়ামের পরিমাণ বেশি। বাংলাদেশ    কৃষি গবেষণা পরিষদ       (বিএআরসি) এর পুষ্টি ইউনিটের পরিচালক         ড. মো. মনিরুল ইসলাম জানান যে, বিএআরসি কর্তৃক ২০১৫ সালে পান্তা ভাতের         অনুপুষ্টিকণা পরিমাপ করা হয় যার পরিমাণ দেখানো হয়েছে সারণি-১ তে।
১৯৯৮ সালের অন্য একটি গবেষণায় জানা যায় যে, গাঁজন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে   ফাইটিক এসিড হাইড্রোলাইসিসের ফলে কিছু পুষ্টি উপাদান যেমন- আয়রন, জিংক ইত্যাদির জৈব-প্রাপ্যতা (নরড়-ধাধরষধনরষরঃু) বেড়ে যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউট্রিশন ও খাদ্য বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপিকা  ড. খালেদা ইসলাম বলেন যে, ভাতের গাঁজন প্রক্রিয়ার পর কিছু পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ বেড়ে যায়। এ প্রক্রিয়ায় পুষ্টি-প্রতিরোধী উপাদান ভেঙে দেয়ার ফলে খাদ্য সহজে হজম হয় এবং খাবারের স্বাদও বেড়ে যায়। ভাতের গাঁজন প্রক্রিয়া যদি সঠিকভাবে করা না হয় তাহলে এটা ক্ষতিকর হতে পারে। এ প্রক্রিয়ায় বিশুদ্ধ পানি
ব্যবহার করা উচিত। তাছাড়া পাত্র সঠিকভাবে ঢাকতে হবে যাতে ধুলা-কণা প্রবেশ করতে না পারে। আমেরিকান একদল বিজ্ঞানীর মতে গাঁজনকৃত ভাত খাদ্যনালীর প্রদাহ উপশম করে এবং শরীরের তাপের ভারসাম্য বজায় রাখে। এ ভাত কোষ্ঠ-কাঠিন্য দূর করে এবং শরীর ঝরঝরে রাখে, বøাডপ্রেসার কমায় ও মানসিক প্রশান্তি আনে।  কথায় আছে ‘পান্তা ভাতের ফল, তিন পুরুষের বল’।
প্রস্তুত প্রণালী  
প্রথমে ভাত রান্নার জন্য স্বাভাবিক নিয়মে চালসিদ্ধ (নড়রষবফ) করার পর ভাতের ফ্যান (তরল অংশ) ছেঁকে আলাদা করে ভাত বাতাসে ৩-৪ ঘণ্টা ঠাÐা করা হয়। তারপর ভাত ঠাÐা বিশুদ্ধ পানি দিয়ে এমনভাবে ভিজাতে হবে যাতে ভাতের ওপর প্রায় এক ইঞ্চি পরিমাণ পানি থাকে। পাত্রটি একটি হালকা সুতি কাপড় দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। এভাবে ৮-১০ ঘণ্টা ভিজানোর পর পান্তাভাত প্রস্তুত হয়। পান্তাভাত প্রস্তুতি ও ঢাকার সময় খাদ্য দূষণ সম্পর্কে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
পরিবেশনা  
পান্তাভাত আগে গ্রামে সাধারণত সকালে লবণ, মরিচ (কাঁচা বা পোড়ানো), পিয়াজ এবং লেবু দিয়ে খাওয়া হতো। তবে খাওয়ার আগে পান্তা ভাত থেকে পানি/ফ্যান আলাদা করা হয়। এ ভাত চিংড়ি মাছ (ভাজা), সবজি, খেজুর/তালের গুড় এবং দই সহকারেও পরিবেশন করা হয়। এছাড়াও পান্তাভাতের সাথে সরিষার তেল ও পিঁয়াজ

দিয়ে আলু ভর্তা, আচার, শুঁটকিমাছ (ভাজা), মাছের ঝোল
বিশেষত : সরষে ইলিশ (সরিষা দিয়ে ইলিশ রান্না), বেগুন বা অন্যান্য ভর্তা দিয়েও পরিবেশন করা হয়।
আমাদের দেশের গ্রাম অঞ্চলে আগে ও কৃষক খুব সকালে লাঙ্গল নিয়ে মাঠে যাওয়ার ২-৩ ঘণ্টা পর সকালের নাশতা

হিসেবে মাঠে পান্তাভাত খেত। এ ভাত তাদের তাৎক্ষণিক শক্তি জোগাত এবং দ্বিগুণ উৎসাহে তারা কাজে নিয়োজিত হতো। কিন্তু কেউ কোনো দিন পরীক্ষা করে দেখে নাই যে পান্তাভাতে কি গুণাগুণ বিদ্যমান। এতদিন এ রহস্য অজানাই ছিল বিজ্ঞানের কল্যাণে তা আজ প্রমাণিত। আর এ পান্তাভাত যদি সঠিকভাবে খাওয়া যায় তাহলে সাধারণ মানুষের আয়রনের অভাব বা রক্তশূণ্যতা থাকবে না এবং      ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়ামের অভাব অনেকাংশে দূরীভ‚ত হবে; আর মানুষ শারিরীকভাবে সুস্থ থাকবে। য়


১উপপরিচালক (এলআর-পিআরএল), ডিএই, খামারবাড়ি, মোবা : ০১৮১৫৫৯৭৩০৪, ই-মেইল : dhossair1960@yahoo.com, ২উপপরিচালক (এলআর-পিআরএল), ডিএই, খামারবাড়ি, ঢাকা।                                                                                                       


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon